মুরোদ যখন নেই তখন গোষ্ঠী করার কি দরকার : দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সাংসদের

21st October 2020 7:43 am বর্ধমান
মুরোদ যখন নেই তখন গোষ্ঠী করার কি দরকার : দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সাংসদের


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( জামালপুর ) :  “তৃণমূলের শত্রু তৃণমূল-ই । আর এমনটা না হলে আগামী ১০০ বছরেও কোন বিরোধী দল বাংলার রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারতো না । ”  পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের সাহাপুরে  অনুষ্ঠিত তৃণমূল কংগ্রেসের জনসভা মঞ্চ থেকে এমনই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল এর । আর কয়েকমাস বাদ পশ্চিমবঙ্গে হবে বিধানসভার নির্বাচন । তার প্রাক্কালে সুনীল মণ্ডলের এমন মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা তৃণমূল শিবিরে । যদিও এদিনের জনসভায় উপস্থিত কর্মী  সমর্থকদের দাবি সুনীল মণ্ডল বাস্তব সত্যটাই জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন ।  পূর্ব বর্ধমানের ২৬২ জামালপুর (তপঃ) বিধানসভা আসনটিকে এবার পাখির চোখ করেছে বিজেপি ।২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুরের বামদূর্গে ঘাসফুল ফুটলেও উলোটপুরাণ ঘটে যায় ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে ।সেবার গোটা রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ভাল ফল করলেও ভরাডুবি হয় জামালপুর বিধানসভা আসনে । বাম প্রার্থী সমর হাজারার কাছে পরাজিত হন তৃণমূল কংগ্রের প্রার্থী উজ্জ্বল প্রামাণিক । এবার জামালপুর বিধানসভা আসন ছিনিয়ে নিতে মরিয়া বঙ্গ বিজেপি । স্বয়ং রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও কিছুদিন আগে জামালপুরের সাহাপুরে জনসভা করে যান । ওই দিন দিলীপ ঘোষের কনভয়ের পথ আটকে  কালো পতাকা দেখানো নিয়ে অশান্ত হয় জামালপুরের জৌগ্রাম এলাকা। সংঘর্ষ বাঁধে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে । সেদিন  সাহাপুরের জনসভা মঞ্চ থেকেই দিলীপ ঘোষ ঘোষনা করেন এবার জামালপুর আসনে পদ্ম ফুটবেই । দিলীপ ঘোষের  দাবিকে নস্যাৎ করতে এদিন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান ও ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি ভুতনাথ মালিক সাহাপুরে পাল্টা জনসভার আয়োজন করেন। তাঁদের হাত ধরে প্রায় ৪ শতাধিক বিজেপি নেতা ও কর্মী এদিন তৃণমূলে যোগদান করেন । এদিনের জনসভায় বিপুল জনসমাগম হয় । সেই জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে সাংসদ সুনীল মণ্ডল দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন । তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল এদিন আরও বলেন , দলের যারা সেদিন পথে নেমে দিলীপ ঘোষের বিরোধীতা করতে গেলেন ,তারা ঠিক করেন নি । আমি মনে করি যারা ওইসব করেছেন তারা রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নেই । দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এইসব করার জন্যই ওই  দিন বিজেপির জনসভায় লোক বেড়ে গেল । বিজেপি ঝামেলা চাইছে । আর সেই ফাঁদেই পা দিয়ে ফেললে যা হয় তাই ওই দিন হয়েছে । সুনীল মণ্ডল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের সময়কার কথা উল্লেখ করে  এদিন বলেন , লোকসভা ভোটে সৌমিত্র খাঁ যখন বিজেপির প্রার্থী হয় তখন ওকে প্রচার করতে দেওয়া হল না । সৌমিত্রকে যদি প্রচার করতে দেওয়া হত তাহলে ও  গোহারা হারতো । যারা সৌমিত্রকে সেদিন বাধা দিয়েছিলেন তারা আখেরে সৌমিত্রকেই মাইলেজ পাইয়ে দিয়েছিলেন ।  জামালপুর বিধানসভায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও বিরুদ্ধ গোষ্ঠীকে একহাত নেন সুনীল মণ্ডল । তিনি বলেন , গত লোকসভা নির্বাচনে
জামালপুরের তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী যদি বিরোধীতা না করতো তাহলে তিনি ৪০- ৫০ হাজার ভোটের লিড পেতেন । মেহেমুদ খানের বিরোধী গোষ্ঠীকে ইঙ্গিত করে সুনীল মণ্ডল বলেন , যাদের সাংগাঠনিক শক্তি নেই , জনসভায় জনসমাগম ঘটানোর মুরোদ নেই 
তাদের আলাাদা গোষ্ঠী করার কি আছে ? ওই সব গোষ্ঠীর নেতাদের কেরামতি কেউ মানবে না । 
সুনীল এদিন সাফ জানিয়ে দেন , আগামী বিধানসভা ভোটে জামালপুরে সাপ , নেউলদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না । গত বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুরে হার হলেও এবার আর হার নয় । জামালপুর আসনে এমন একজনকে প্রার্থী করা হবে যিনি সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি হবেন । জামালপুর বাসীর মনের মানুষ হবেন । কেউ এবার চুলকাতে আসলে তাকে আর চুলকাতে  দেওয়া হবে না । জামালপুর বিধানসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থীকে জিতিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে উপহার দেওয়া হবে । 

   





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।